প্রকাশিত: ১৩/০৫/২০১৬ ৯:১২ এএম
উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
কক্সবাজারে চলমান ইউপি নির্বাচনে বেশ কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসায়ি এবং ইয়াবা গডফাদার প্রার্থী হয়েছে। আবার এর আগে হয়ে যাওয়া নির্বাচনে অনেকে প্রার্থী হয়ে বেশিরভাগ পরাজিত হলেও কয়েকজন নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে ইয়াবা ব্যবসায়িদের কালো টাকা সাদা করতে নির্বাচনকে টার্গেট করে তারা মাঠে নামছে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তাদের আয়ের হিসাব এবং হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য এবং বাস্তব অবস্থা দেখলেই আসল তথ্য বের হয়ে আসবে বলে মনে করেন সচেতন মহল। অন্যদিকে ইয়াবা গডফাদারদের নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং জন প্রতিনিধি হওয়াকে জাতির জন্য অশনি সংকেত বলে মনে করছে বিশিষ্টজনেরা।
কক্সবাজার ঝিলংজা ইউনিয়নের লারপড়া এলাকার রুস্তম আলী, ফকির আহাম্মদ নামের বেশ কয়েকজন ভোটার বলেন, আগামী ২৮ মে ঝিলংজা ইউপি নির্বাচন। এখানে নির্বাচনের চেয়ে বেশি আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে এখানে বড় বড় ইয়াবা গডফাদাররা প্রার্থী। যারা কিছুদিন আগেও বাজারে সামান্য ব্যবসা করতো তারা আজ প্রাইভেট কার নিয়ে চলাফেরা করে, হঠাৎ করে তারা আবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে সবাইকে আতংকের মধ্যে ফেলেছে। কারন আগে কোন সময় নির্বাচনের মাঠে না থাকলেও হঠাৎ করে প্রার্থী হয়ে প্রচুর কালো টাকা ছাড়ছে। মনে হয় ভোট ভাল পাবে। কারন মানুষ কালো টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যেতে সময় লাগেনা।
পিএমখালী ইউনিয়নের মাস্টার আবুল হোসেন, মোঃ আলম সহ অনেকে বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ি এবং গডফাদার নির্বাচনি মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীতার জন্য তৈরি হয়েছে। তারা ইতিমধ্যে মাঠও অনেকটা তাদের পক্ষে নিয়ে এসেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে যখন তপসিল ঘোষণা করা হয়েছিল তখন তাদের খবরও ছিল না। এখন তারা পুরুদমে মাঠে নামছে। আমাদের ধারনা তারা একটি বড মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে। প্রথমত তারা তাদের কালো টাকাকে সাদা করতে চাইছে। আর এলাকার একটু নিজেকে পরিচিত করতে চাইছে। তবে আশংকা হচ্ছে যদি কোন কারনে কালো টাকার প্রভাবে ইয়াবা গডফাদাররা নির্বাচিত হয়ে যায় তাহলে এটা জাতির জন্য খুবই দুঃখজনক ঘটনা হবে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের একরামুল হক, আবুল মঞ্জুর বলেন এখানে আগে যে সব ইউনিয়নে নির্বাচন হয়ে গেছে সেখানে বেশ কয়েকজন ইয়াবা গডফাদার আছে এটা সবাই জানে। এমনকি অনেকের নাম মন্ত্রণালয়ের তালিকাতেও আছে। বিশেষকরে মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে অনেকে এখনো ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত। আবার কিছু কিছু আছে তাদের ভাই বা নিকট আত্মীয়-স্বজন ইয়াবা ব্যবসায়ি। তারা বলেন বর্তমানে টেকনাফ পৌরসভা নির্বাচনে বেশ কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসা করে সফলতার অভিযোগ আছে। আবার সরাসরি ২ জনের নাম তালিকাতেও আছে। এবং এক প্রার্থীর নিকট আত্মীয় ২ দিন আগে আবাসিক হোটেল থেকে ইয়াবাসহ আটক হয়েছিল। সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ।
এদের এখন বাছাই করার কিছুই নেই বরং ভাল জনপ্রিয় মানুষ তাদের সাথে নির্বাচনি মাঠে পেরে উঠবে না। কারন তাদের প্রচুর টাকা আছে সবকিছু তারা পারবে।
উখিয়ার জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত কয়েকজন নির্বাচনি মাঠে আছে এটা সত্য। নিজে বা তাদের ভাইকে নির্বাচন করাচ্ছে। আমার মতে তারা একটি বড় টার্গেট নিয়ে নির্বাচনি মাঠে কাজ করছে। যদি কোন ভাবে তাদের লক্ষ্যে তারা সফল হয় তাহলে সৎ ন্যায় পরায়ন জন প্রতিনিধিরা প্রশ্নের মুখামুখি হবে। আমার মতে এসব বিষয় নিয়ে মানুষকে সচেতন করা দরকার।
শিক্ষাবিদ সুজন সভাপতি প্রফেসর এমএ বারী বলেন এক সময় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সৎ যোগ্য প্রার্থীদের ভোট দিতে সচেতন করতো। বিশেষ করে কালো টাকার মালিকরা কোন ভাবেই যেন নির্বাচনি মাঠে আসতে না পারে সে জন্য প্রচারনা চালাতো এখন সবকিছু বন্ধ। আর এ সব কালো টাকার মালিকরা দেশ ও জাতির শত্রু তাদের কোনভাবেই জন প্রতিনিধির মত পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ন দায়িত্বে আসতে না পারে সে জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। – সূত্র :দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত

বান্দরবানে কেএনএফের আস্তানায় যৌথ বাহিনীর অভিযান, নিহত ৩

বান্দরবানের রুমা উপজেলার রনিন পাড়ার কাছে ডেবাছড়া এলাকায় কেএনএফের একটি আস্তানায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর ...